আমাদের শৈশব ছিল বৃষ্টিমাখা রোদ্দুর
আমরা বলতাম খেকশিয়ালের বিয়ে হচ্ছে!
আমরা পড়তাম- ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
নদেয় এলো বান’! আহ! কী বিষণ্ন মেদুর!
আমাদের তারুণ্যে বৃষ্টি ছিল অবিরাম,
আমরা দেখতাম বকের সারির পলায়ন!
আমরা জসীমউদদীনের মন খারাপ করা
‘পল্লীবর্ষা’ কবিতা পড়তাম। কেয়াবনের বৃষ্টি
দেখে আমরা গাইতাম- ‘এমন দিনে তারে
বলা যায়…’! আমাদের আকাশজুড়ে বৃষ্টি
নামতো- ‘বৃষ্টি, বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টি…’!
এরপর আমাদের খেকশিয়াল গেলো, নদী গেলো,
আমাদের তারুণ্য গেলো, বকেরা গেলো দেশছেড়ে,
জসীমউদদীনের কবিতা ওঠে গেলো, কেয়াবনগুলো
কোথায় লুকাইল, আমাদের প্রিয়জনরাও গেলো হারিয়ে,
আমাদের আকাশ গেলো, আমাদের অবকাশ গেলো,
আমাদের বৃষ্টিও বিদায় নিলো কোনো এক
বিষণ্নের প্রাতে! এক আষাঢ়ি পূর্ণিমার রাতে!!
আমাদের মেঘদূত হারিয়ে গেছে চিরতরে,
ঝাউবন, বাদাবন, কেয়াবন আজ বুর্জ দুবাই,
হিজল, তমাল, ফণীমনসার বিনাশের কালে
আমরা বেহুঁশ হয়ে পড়ে ছিলাম উজ্জয়নীনগরে!
বৃষ্টিহীন প্রশস্ত প্রান্তর আজ যেন এক মৃত্যুকূপ।
‘আম জাম কাঁঠাল বট অশ্বত্থরা করে আছে চুপ’!