প্রথম পাতা » লেখা » বটবৃক্ষ

বটবৃক্ষ

Banyan tree

এই তো সেদিন, ঝড়ের আঘাতে ঢলে পড়ল পাহাড়তলি গ্রামের সৌন্দর্যের তীর্থ ছোয়া। শুধু ঠনঠন করে দাড়িয়ে এক ভিন্নরূপী বটবৃক্ষ। মনে হয় যেন গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে একাই। নেই কোলাহল, নেই কারো সাম্যতার প্রতিধ্বনি। তবুও যেন নিজে নিজেই আছে এক ভিন্নরূপী সত্তা হয়ে। নেই! হাজার জনতা নেই, নেই কোন অবিশ্বাসের ছোয়া। তবুও যেন নিজেকে মনে করছে ব্যস্ততার এক প্রবল ছায়া। আজ হয়তো সেই ঠনঠন করে দাড়িয়ে থাকা ভিন্নরূপী বটবৃক্ষের পাশে কেউ নেই। কিন্তু একদিন তো ছিল, যেদিন মানুষ গরমে তপ্ত হয়ে একটু প্রশান্তি পেতে ছুটে আসত হাজার ব্যস্ততা ছেড়ে। যেদিন মানুষ ক্ষিণপদস্থ পায়ে সংগীতের তালে নেচেছিল এই বৃক্ষ ছায়ার তলে। সেদিন এ বৃক্ষ ছায়া পেত তার নিজস্ব প্রশান্তি, সেদিন এ বৃক্ষ ছায়ার মাটি তার রক্তিম আদলে যেন খুঁজে পেত সবুজতার সুখ।

যদি আবার তারা আসে। যদি আবার এই নিঃসঙ্গের পাশে কেউ মাথা রেখে নিদ্রা জ্ঞাপন করে। এই ভেবে অবিরাম যেন ছায়া দিয়ে যায় বটবৃক্ষ। কিন্তু এ যেন অরণ্যে রোদন। দিনে দিনে বটবৃক্ষের দিন আখেরি ঘনিয়ে এলো। এক দিন, দু’দিন, এমনি দীর্ঘসূত্রতায় পুরোপুরি অক্কা পেল বটবৃক্ষটি।

আবার শুরু হলো নতুন আয়োজন। কেঁচে গন্ডুস হলো শত শত মানুষের আনাগোনা, শুরু হলো আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়া কিছু ভদ্র সমাজের বসবাস। কিন্তু কেউই সেই অক্কা পাওয়া বটবৃক্ষের দিকে লক্ষ্যই করে না বরং সেই বটবৃক্ষকে কেটে ফেলার হুকুম করলেন গ্রামের বড় দাদা।

হঠাৎ এক অপরিচিত সন্ন্যাসী এলো পাহাড়তলির মাটিতে। এসেই দেখে একোন এলাহি কান্ড! কোন মানুষকে সে চেনে না, আর কোন মানুষও তাকে চেনে না। শুধু চেনে এক অজানা সত্তাকে। যার পত্র লালসায় কামাল মিয়ার ছাগিটি জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট চেটে নিত বারবার। সে পত্র আজ কোথায়! তার যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে, বটবৃক্ষটি অক্কা পেয়েছে। তাই তিনি বৃক্ষপাড়ে তার বসতি স্থাপনের পর বৃক্ষের পরিচর্যা শুরু করল। শুরু হলো মানুষের আনাগোনা, পাগল! এটাতো পাগল! তাই দিন কয়েক পর গ্রামের বড়দাদার আদেশে বের করে দেয়া দেওয়া হলো সেই বৃক্ষবন্ধু পাগলটিকে। কিন্তু তবুও থেমে রইল না তার চুপিসারে বৃক্ষ পরিচর্যা।

হায়! হায়! একি! কামাল মিয়ার ছাগিটি যে পত্রের লালসায় জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট চেটে নিত, সেই পত্র আজ তার আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

           "আসুন বৃক্ষ সভ্যতা বাঁচাই, 
        বৃক্ষবন্ধু হয়ে বিশ্ব সবুজতা মেটাই"

লেখা থেকে আরও পড়ুন

লেখক পরিচিতি:

Avatar photo
সাইমুম হাবীব
লেখালেখি কে এখনো পেশা হিসাবে নিতে পারি নি বটে কিন্তু একটা চরম নেশায় রূপ নিয়েছে ঠিকই। তাই শখ কিংবা নেশার বশবর্তী হয়ে অবিরাম লিখে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

ইতল বিতলে আপনার লেখা আছে?আজই লিখুন



আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *