প্রথম পাতা » অন্যান্য » ব্ল্যাক ফ্রাইডে বা কালো শুক্রবার আসলে কী?

ব্ল্যাক ফ্রাইডে বা কালো শুক্রবার আসলে কী?

Black Friday craze

ব্ল্যাক ফ্রাইডে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ একটি দিবস। প্রতি বছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার আমেরিকায় থ্যাঙ্কস গিভিং ডে পালিত হয়। ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’ এক ধরনের নবান্ন উৎসব, ভালো ফসলের জন্য বিধাতাকে ধন্যবাদজ্ঞাপন। এদিন আমেরিকার জনগণ একে অপরকেও ধন্যবাদ জানায়। এর পরের দিনই অর্থাৎ নভেম্বর মাসের চতুর্থ শুক্রবারটি ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হিসেবে পরিচিত। মহাধুমধামে আর ছাড়ে কেনাকাটার দিন হচ্ছে এই ব্ল্যাক ফ্রাইডে। বড়দিনকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ছাড়ে পণ্য বিক্রির আয়োজন করে থাকে। আমেরিকান রীতি অনুযায়ী এ শুক্রবার থেকেই শুরু হয় ক্রিসমাস হলিডে সিজন। মানুষ তাদের পরিবার ও বন্ধু বান্ধবদের জন্য বড়দিনের উপহার কিনতে শুরু করে।

১৮৬৯ সালের দিকে আমেরিকায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল, ঠিক সেই সময় মন্দা থেকে উত্তরণের উদ্দেশ্যেই একটি বিশেষ দিবসের কথা ভেবেছিল ব্যবসায়ীরা। যেদিন তারা অবিশ্বাস্য অঙ্কের নানা মূল্যছাড় ঘোষণা করবে জনগণের জন্য। ফলে পাগলের মতো কেনাকাটা করবে মানুষ। ক্রিসমাসের ছুটি সামনে থাকায় তারা থ্যাংকস গিভিং ডে’র পরের দিনটিকেই এর জন্য বেছে নিয়েছিলেন।

অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, একটি ব্ল্যাক ফ্রাইডে দিবসে যে পরিমাণ বেচাকেনা হয়, তাতে এই একদিনেই আমেরিকার অর্থনীতির সূচক এক লাফে অনেক উপরে উঠে যায়।

কেন কালো?
sorboto mongol radhe

এই ফ্রাইডেকে ‘ব্ল্যাক’ সাব্যস্ত করার পেছনে দুটি বিশেষ ব্যাখ্যা প্রচলিত আছে। দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটিই বেশি প্রচলিত:

  • ব্যাপক ছাড় ও কেনাকাটার হুড়োহুড়িতে রাস্তা-ঘাটে ট্রাফিকের নাজেহাল অবস্থা হয়, ফলে পুরো ট্রাফিক ব্যবস্থা একরকম অচলাবস্থায় পৌঁছায় বলে এই ফ্রাইডেকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বলে।
  • সাধারণত হিসাবের খাতায় ক্ষতিকে লাল কালিতে চিহ্নিত করা হয়। অন্য দিকে লাভের হিসাবগুলো কালো কালিতে লিখতে অভ্যস্ত ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কাজেই ব্যবসায় বিরাট লাভ দিয়ে যে দিনটি শুরু হয়, সেই দিনটিকে তারা ব্ল্যাক ডে নামেই অভিহিত করতে শুরু করেছিলেন।

এ হিসেবে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হলো আমাদের ‘হালখাতা’ দিবসের মতো। পহেলা বৈশাখে যেমন সারা বছরের বাকিতে ক্রয়-বিক্রয় হালখাতার মাধ্যমে উভয়ের মুখে হাসি ফুটে; ঠিক তেমনি ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে সারা বছরের লোকসান উঠে আসে।

১৯৬১ সালে জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ দিনটিকে “বিগ ফ্রাইডে” নামকরণের পরামর্শ দিয়েছিলেন; তবে এটি কেউ আমলে নেয়নি।

আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে, ফ্যাক্টরি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স জার্নালে, ১৯৫১ সালে এবং ১৯৫২ সালের নভেম্বরে এই দিনটিকে “ব্ল্যাক ফ্রাইডে” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কারণ কর্মচারীরা থ্যাঙ্কসগিভিং ডে এর পরদিন অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিত, যেন একটানা চার দিনের ছুটিতে থাকা যায়।

আমরা আমেরিকার ব্ল্যাক ফ্রাইডে পালন করছি আর জৌলুস হারাচ্ছে আমাদের হালখাতার অনুষ্ঠান।

অন্যান্য থেকে আরও পড়ুন

লেখক পরিচিতি:

Bikul
বিকুল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। ভালোবাসেন ব্লগিং করতে এবং অন্যের লেখা পড়তে। অবসর সময় কাটান ভালো মুভি দেখে। সারা বিশ্ব ঘুরে দেখতে চান।

ইতল বিতলে আপনার লেখা আছে?আজই লিখুন



আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *