ক্রিকেটে নরাইল এক্সপ্রেসখ্যাত সাংসদ মাশরাফিকে নিয়ে যে গ্রাফিতি/দেয়াললিখনটি সোশাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে তা লজ্জাকর। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবশ্যই তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। মানুষ হিসেবেও তিনি তাঁর নির্বাচনি এলাকায় জনপ্রিয়। তিনি একজন আইনপ্রণেতা।
বিশ্বক্রিকেটে সাকিব অনন্য, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বর্তমানে তিনিও একজন সাংসদ। আইনপ্রণেতা।
ড্রয়িংরুমের আকর্ষণ ফেরদৌসও একজন জননন্দিত অভিনেতা, নায়ক। তাঁর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমা দেখে এদেশের বহু তরুণ তরুণীরা তাদের হৃদয়ের নায়ক বানিয়েছে। বহু সিনেমায় তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন! অনেক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে দর্শকের হাততালি পেয়েছেন। তিনিও একজন সাংসদ। আইনপ্রণেতা।
ব্যারিস্টার সুমন একজন আয়রনম্যান হিসেবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন। গত নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিও একসময় বাংলার ফাটাকেস্টোরূপে অন্যায়ের সামনে ক্যামেরা তাক করেছেন। ভয়েসকে করেছেন সুউচ্চ। এখন তিনিও সাংসদ। আইনপ্রণেতা।
বাংলার সকল ইতিহাস রাজনীতিতে গিয়ে শেষ হয়। হয়তো থেমে যায়। এতোবড় একটা অন্যায়, গণহত্যা হলো কিন্তু আমাদের ‘নায়ক’, ‘ক্যাপ্টেন’, ‘অলরাউন্ডার’, কিংবা ‘ব্যারিস্টার’ কেউ বুক পেতে সামনে দাঁড়ায়নি! কেউ বলেনি যে, এই ছাত্ররা, শ্রমিকরা, সাধারণ মানুষরা আমার ভাই। এদের বুকে গুলি চালাবেন না! মুজিবকোট গায়ে দিলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করা যায় না! তাঁর মতো সাহসী হওয়া যায় না, নির্লোভ ও ত্যাগী হওয়া যায় না।
মাশরাফিকে নিয়ে যা হচ্ছে তা মূলত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তবে ক্ষোভ প্রকাশের ভাষা বিপ্লবাত্মক হতে পারে, অশ্লীল নয়। বিপ্লবের ভাষা কখনো অশ্লীল হয় না, একে তীব্র শব্দবোমায় পরিণত করতে হয়। কোনো আন্দোলনেই অশ্লীলতা কাম্য নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, মাঠের ক্যাপ্টেন আর পর্দার নায়ক বাস্তব জনজীবনে কোনো কাজে আসেনা। আমরা প্রত্যাশা বেশি করি বলে ধরা খাই বেশি।
সকলের জয় হোক।