দাদা আমি সোশ্যাল ছেলে, ফেইসবুকেতে থাকি
পাড়ার খবর না রাখলেও দেশের খবর রাখি
যেমন এই- অর্ণবকে ধরলো কেন
মিডিয়ায় কী হবে
বিহার ইলেকশনের হাওয়া
বাংলায় কী যাবে?
ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে
ঘামাই না আর মাথা
আমার এক স্ট্যাটাসে হাজার কমেন্ট
আমি কি আর যা তা?
দাদা আমি সোশ্যাল ছেলে, ফেইসবুকেতে থাকি
বাড়ির খবর না রাখলেও দেশের খবর রাখি
এইতো কালই দেখা হলো
তারক দাদুর সাথে
একা একা যাচ্ছে দাদু
মোবাইল নেই হাতে!!!
বললাম আমি কেমন আছো
ঠাকমা কেমন, ভালো?
আমার কথা শুনে দাদু
ঘাড় বেঁকিয়ে তাকালো
বললো দাদু, কেমন তুমি প্রতিবেশী
পাশের বাড়ি থাকো
ঠাকমা তোমার গেছে মারা
সেটাও জানো নাকো?
বললাম আমার দোষ কী দাদু
পাইনিতো আপডেট
ফেইসবুকে আপনার একাউন্ট নেই
আপনিতো ব্যাকডেট
চন্দন বলে ঠাকুমাকে
জাপটে বুকে ধরে
কান্নামুখে সেলফি দিতেন
লাইক যেত ভরে
দেশের মানুষ জানতো সবাই
ঠাম্মা গেছে মারা
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসতো প্রচুর
সেন্টিমেন্টে ভরা
স্ট্যাটাস দিতেন মিস ইউ জান
হয়ে গেলাম একা
কমেন্ট বক্সে আমার কমেন্ট
দেখতেন ঠিক লেখা
লিখতাম আমি- আর কেঁদো না দাদু সোনা
আমরা আছি পাশে
লাগলে একা, চ্যাটে এসো
আছি বারো মাসে
নেক্সট টাইমে কেউ যদি যায়
স্ট্যাটাস দিয়ে বলো
সবার আগে ফেইসবুকেতে
একাউন্টটা খুলো
থরথরিয়ে কাঁপলো দাদু
আমার কথা শুনে
অবাক হয়ে বললো আমায়
নিজের আঙ্গুল গুনে
ফেইস দেখেছি, বুক দেখেছি
একাউন্ট ব্যাংকে আছে
তাই বলে প্রতিবেশীর খবর নিব
ঐ সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে?
বললাম আমি, ঠাণ্ডা করো মাথা দাদু
পাল্টেছে দেশ মানো
বাড়ি বসেই সোশ্যাল সাজো
ফেইসবুকটা জানো
কার ঘরে কী রান্না হলো
কে পুষেছে পাখি
কার ঘরে কার বাচ্চা হলো
কে বুজেছেন আঁখি
হাতের মুঠোয় দেশ দুনিয়া
পাড়ার খবর পরে
আমার ভাষণ শুনে দাদু গেলেন
হিচকি খেয়ে মরে
তারপর…
দাদুর সাথে সেলফি দিলাম
স্ট্যাটাস দিলাম লিখে
মিস ইউ দাদু, ঠাম্মার সাথে
স্বর্গে থেকো সুখে
দাদা আমি সোশ্যাল ছেলে, ফেইসবুকেতে থাকি
প্রতিবেশীর নেই না খবর, দেশের খবর রাখি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সামাজিক প্রভাব অত্যন্ত চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। আমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু মানুষের গল্প এটি। যারা জানেই না, ২৪ ঘন্টার মধ্যে কত ঘন্টা তারা ফেইসবুকে কাটায়।
এদেরকে বলা যেতে পারে “ফেইসবুক প্রতিবন্ধী”।
রুদ্রনীল ঘোষের ভাইরাল হওয়া কবিতা: দাদা আমি সাতে পাঁচে থাকি না