প্রথম পাতা » জীবনযাপন » চাহনির চেহারা, মনের প্রতিচ্ছবি!

চাহনির চেহারা, মনের প্রতিচ্ছবি!

your look

কারো দিকে আপনি কীভাবে তাকান, কারো শরীর চোখ দিয়ে কীভাবে মাপেন কিংবা চাহনিতে কোন ভাষা থাকে- মানুষ হিসেবে পাশের মানুষটি আপনাকে এসব দেখেই মূল্যায়ণ করতে পারে। কারো মানসিকতা সুন্দর কিনা, কেউ কুচিন্তা ধারণ করে কিনা কিংবা সে কী ভাবছে- চোখ আসলে বলে দেয়। মুখের কথা মনের থেকে ভিন্ন হতে পারে কিন্তু চোখে সত্য থাকে। সে চাটে নাকি ঘাটে- বোঝা যায়। বিশেষ করে মেয়েরা বোঝে। পুরুষেও যে বোঝে না তা নয় তবে কেউ কেউ উল্টোটাও বোঝে!

মানুষ আসলে কিসে সুন্দর? চেহারায়? মনে হয় না। মানুষের সৌন্দর্য তার ভাবনায়। শোভা লেগে থাকে চাহনিতে আর সরলতা থাকে কথায়। যেখানে চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে সেখানে সাধুর বেশ ধরা যায় তবে শেষমেশ ধরা খায়! মনের মধ্যে যে ভাবনা চলে তা লুকিয়ে মানুষ বেশিক্ষণ অভিনয় করতে পারে না। দুমিনিটের দুর্বলতা সব অসততা বের হয়ে আসতে পারে। মুখোশের অন্তরালের আসল চেহারা দেখা যেতে পারে। মানুষের মন পবিত্র থাকলে বাহিরে কাঁদামাটি জমতে পারে না।

মানুষের সাথে ভালো কথা বলা, ভালো আচরণ করা- এসবে অপার্থিব মূল্য আছে।  দৃষ্টির শুভ্রতা আপনাকে সম্মানিত করে। কতজন সম্মান করে সেসব না জানলেও জীবন চলবে কিন্তু গোপনে কেউ কেউ আপনাকে শ্রদ্ধা করে, আপনার মনের পবিত্রতা সুখের দোলা দেয়- এসব এইজীবনের সেরা অর্জন। জীবনে শুধু বর্জনকে অর্জন বানিয়ে ছুটবেন না। না পাওয়ার মধ্যেও অনেকগুলো পাওনা থাকে! ভালো থাকুন- দুনিয়া আয়োজন করে আপনাকর ভালো রাখবে।

কারো দিকে তাকালে মনের পবিত্রতা নিয়ে তাকবেন। নয়তো মাটিতে তাকাবেন। একবার যদি অসঙ্গতি ধরা পড়ে তবে আর সহজে পূর্বের মসৃণ সম্পর্কে ফিরতে পারবেন না। লোভ ও কামনা চাহনি, ক্রোধ ও তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি অবস্থানকে নড়বড়ে করে দেয়। আপনি তাকালেন অথচ মানুষ বুঝবে না- এমনটা ভাববেননা। সুচিন্তা আনয়ন ছাড়া শ্রদ্ধেয় মানুষ হওয়া যায় না। যে চোখে স্বামী/স্ত্রী’র দিকে তাকান, যে চোখে প্রেমিক/প্রেমিকার দিকে ফিরেন সে চোখে রাজা-প্রজার দিকে ফিরবেন না। দোষীকে ন্যায়ের চোখে দেখবেন এবং নির্দোষকে দোয়ার চোখে। তবে তো অবস্থান থাকবে।

মানুষ সবার কাছে ফেরেশতা চরিত্রের হতে পারে না। তবে সবার কাছে শয়তান হওয়াও ঠিক নয়। আবর্জনা মনে ঠাঁই দিলে, কারো ক্ষতির কথা ভাবলে তা মানুষের চেহারায় ফুটে ওঠে। সৌন্দর্য বর্ণ দিয়ে, আকৃতি দিয়ে কিংবা ওজন দিয়ে মাপা যায় না। মানুষের আসল সৌন্দর্য সুচিন্তায়। সকল কদর্যতা কুচিন্তায়। যদি চিন্তার অদলবদল না ঘটে, ভালো যদি মন্দকে দমন করতে না পারে তবে খারাপ মানুষ হিসেবে খেতাম পাবেন। তারপর বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়াই শ্রেয়। মন্দ লোকের বেশিদিন বাঁচা মানে সমাজের অন্ধ থাকা এবং নিজের দুর্গন্ধ বাড়ানো! মানসিকতায় সুন্দর হলে আপনার থেকে সমাজে সুবাতাস ছড়াবে।

জীবনযাপন থেকে আরও পড়ুন

লেখক পরিচিতি:

রাজু আহমেদ
প্রাবন্ধিক।

ইতল বিতলে আপনার লেখা আছে?আজই লিখুন



আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *