এক আশ্চর্য দিনে আপনার জন্ম। ২৯ ফেব্রুয়ারি। চার বছর পর পর আপনার এদিনটি আসে। আমি দুটি জন্মদিনে আপনার কাছে ছিলাম। আপনি অসম্ভব ব্যক্তিত্বপ্রবণ একজন মানুষ। সরকারি চাকরি, নীরব সুখ স্বাচ্ছন্দকে জলাঞ্জলি দিয়ে আপনি গেলেন মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীন বাংলা বেতারে গেলেন বজ্রকণ্ঠ হয়ে।
একদিন দেশ স্বাধীন হলো। কতজনের কতো কী হলো! লাল-নীল দালান, টাকাকড়ির ছড়াছড়ি। অথচ আপনি থেকে গেলেন বেইলিরোডের ভাঙা মঞ্চে! মুক্তনাটকের আন্দোলনে। আপনি নাটকে শ্রেণিসংগ্রামকে তুলে ধরলেন। পশ্চিমের সিঁড়ি, গিনিপিগ, এখানে নোঙর, ইবলিশ, পাথর, আদিম, রাঢ়াঙ, সংক্রান্তি, চে’র সাইকেল, জয়জয়ন্তী আরো কতো কতো নাটকে আপনি গড়ে তুললেন প্রান্তজনের সংগ্রাম, অধিকার আর দাবির ফিরিস্তি। আপনার নাটক শুধু বিনোদন নয়, শ্রেণিসংগ্রামের সুতীক্ষ্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠল।
আপনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেন। নিলেন না। একুশে পদক পেলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন। আপনি গড়ে তুললেন এক ঝাঁক তরুণ নাট্যজন- আজিজুল হাকিম, তুষার খান, তমালিকা, চঞ্চল চৌধুরী, আখম হাসান, শামীম জামান, বৃন্দাবন দাস প্রমুখ। স্বাধীনতার পর আপনারাই আমাদের ভরসার জায়গা হয়ে উঠলেন। তবে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন বলা যায়। রুচির দুর্ভিক্ষ বিষয়ে আপনি যার কথা উদাহরণ হিসেবে এনেছেন এদেশের বাজার এখন তার ও তাদের দখলে। সরি মামুন ভাই, আপনি ঠিক বলেন নাই। রুচির দুর্ভিক্ষে আমরাই পড়ে গেছি।
আপনি দয়া করে এ সংক্রান্ত কমেন্টগুলো পইড়েন না। এ জাতির কাছে আগরতলা আর চকিরতলার মধ্যে কোনো দূরত্ব নাই।