প্রায় ২০০ বছর আমাদের শুধু নয় প্রায় সমস্ত বিশ্বকে শাষণ করেছে ব্রিটিশ জাতি। আজ সেই ব্রিটিশ জাতি যে শহর লন্ডন থেকে প্রায়সমস্ত বিশ্বকে শাষণ করত সেই শহরের মেয়র বা শাষক একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সাদিক খান। আর খোদ ব্রিটিশজাতির যিনি শাষক বা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তিনি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এসব বিষয় এতদিন ছিল একজন উপমহাদেশের নাগরিক হিসাবে অহংকার বা গর্ব করার বিষয়। কিন্তু যখন খোদ সেই বিশ্ব রাজাদের অভিষেক চলাকালীন সময়ে স্বয়ং বিটিশ শাষক বলেন আমি এবং আমার স্ত্রী আপনার ফ্যান আপনাকে আমরা অনুস্বরণ করি আপনাকে দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হই, আপনি একজন অর্থনৈতিক নেতা, আমি চাই আমার মেয়ে দুটি আপনার মতো হোক, আপনি বিশ্বনেতা তখন বাংলাদেশি হিসাবে আমাদের অহংকারের সীমা থাকেনা। যার সম্পর্কে এই কথা গুলো বলা হয়েছে তিনি আর কেউ নন তিনি হলেন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতি নদীর তীরে বেড়ে ওঠা একটি ছোট মেয়ে যিনি বিশ্বনেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতারস্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা যিনি বাংলাদেশের ৪ বার বা ২০ বছর যাবৎ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন কারী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ৫ম বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য শপথ নিয়েছেন।
কিছু দিন আগে বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিধি দল নিয়ে এক ত্রিদেশিয় ঝটিকা সফরে বের হন। বিশ্বের জন্য গুরত্বপূর্ণ তো বটে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দেশ জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য ছিল এই সফরের অন্তর্ভূক্ত দেশ। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সর্বশেষ যুক্তরাজ্যে সফর শেষে ১০ ই মে ২০২৩ মঙ্গলবার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
ব্রিটিশ রাণী ২য় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তৃতীয় প্রিন্স চার্লস উইলিয়াম উত্তারাধিকারী সূত্রে রাজার দায়িত্ব পান।
রাজার সেই দায়িত্ব গ্রহনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরকালে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন দুই বিশ্ব নেতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং এই বৈঠকেই এক বিশ্বনেতা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অপর বিশ্বনেতা বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলাপচারিতার মূহুর্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেই গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতি নদীর তীরে বেড়ে ওঠা কন্যা শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন।
অনুস্বরণ করার সমধিক কারণও রয়েছে রাজনীতির কবির যোগ্য উত্তরসূরী রাজনীতির যাদুকর কে। উল্লেখ্য বঙ্গবন্ধু কে মার্কিন মুলুকের ফোর্বস ম্যাগাজিন রাজনীতির কবি উপাধি দিয়েছিল তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার জন্য। রাজনীতির যাদুকর এই কারনে যে তিনি রাজনীতির ছক যেভাবে একেছেন তার যাদু দিয়ে ঠিক সেইভাবে হয়েছে দেশে ১৯৮১ সালে প্রত্যাবর্তনের পর। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের কাছে ছিলেন অধিক পূজনীয় রাষ্ট্রপতি কন্যা শেখ হাসিনা। তৎপরবর্তীতেই তিনি হয়ে গেলেন নতুন সরকার এবং সরকারের আজ্ঞাবহ কূটনৈতিক মহলের নিকট পারসোনা নন গ্রাটা বিদেশে থাকাও তাঁর জন্য কঠিন হয়ে গিয়েছিল।তবুও তিনি অনেক সংগ্রাম করে টিকে ছিলেন বিদেশের মাটিতে। তিনি ১৭ ই মে ১৯৮১ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এমনকি জীবননাশেরঝুঁকি নিয়ে লন্ডনের রাজনৈতিক আশ্রয় থেকে দেশে ফিরে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাল ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বনেতাদের নেতায় পরিণত হন। যার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও করাচির রাজবন্দী থেকে লন্ডন হয়ে দেশে ফিরেছিলেন রাজা(রাষ্ট্রপতি) হিসাবে।
নিজের দলের অবস্থান শক্ত করতে ১৯৮৯ সালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে যুগপৎ ভাবে আন্দোলন করে এরশাদ সরকারের পতন নিশ্চিত করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা এদেশে নিশ্চিত করেন।পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সাথে যৌথ আন্দোলনের মাধ্যমে একটি সরকারকে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে তত্ত্বধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং যুগপৎ ভাবে সরকার গঠন করেন।আবার বহুল আলোচিত সমালোচিত ১/১১ এর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এরপর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে বিরোধী দলগুলোর এক দফা দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্বাচনের ব্যবস্থা করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন । এসকল আন্দোলন দলটিকে আবার প্রভাবশালী করে তুলেছে।এবার পালা দেশের জন্য দলটির এজেন্ডা পূরণের। শুরু হয় দেশব্যাপী বিদ্যুতায়নের পালা যে দেশে ১৯৯০ এর দশকেও শহর বা নগরে একটি র্নিদিষ্ট সময়ের জন্য শুধু বিদ্যুৎ থাকত বাকী সময় হারিকেন বা মোমবাতির উপর ভর করতে হতো শহর বা নগরবাসীকে। আর গ্রামে বিদ্যুৎ সে তো কল্পনার বাইরে ছিল। শহর বা নগরের নির্দিষ্ট কিছু রাস্তা ব্যতিত দেশ ব্যাপীছিল কর্দমাক্ত রাস্তা।
আজ সেই দেশের অনেক তরুণ বা কিশোর হারিকেন, মোমবাতি, কাঁচা রাস্তা চিনেইনা কেমন এবং সেগুলো তাদের জানাতে হলে গুগলকরে জানাতে হবে তাছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে মধুমতি তীরের সেই রাজনীতির কবিকন্যা রাজনীতির যাদুকরশেখ হাসিনার দূরদর্শী, বলিষ্ঠ, সূক্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে।১৯৯৬ সালেও একটি মোবাইল ফোন সংযোগ নিতে লাখ টাকা তারপর দশহাজার টাকা লাগত বর্তমান ১০ টাকা বা বিনামূল্যে পাওয়াযায় সেই সংযোগ। সেই সময় শুধুমাত্র অডিও কথা বলা যায় এমন মোবাইল হাতে গোনা দুই একজন বড় বড় শিল্পপতির হাতে দেখাযেত আর এখন সকল নাগরিকের হাতে একাধিক মোবাইল যেগুলো দিয়ে শুধু অডিও কলে কথা বলা নয় ভিডিও কলসহ ইন্টারনেটেরযাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা যায়।আজ নিউইয়র্ক, জিদ্দা, লন্ডন বা ইসলামাবাদে ফোরজি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক বাংলাশের রসুলপুর গ্রামেও ফোরজি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক।এক্ষেত্রে বিশ্বের বড় বড় শহর এবং বাংলাদেশের গ্রামের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। এই ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে এদেশের তরুনরা গ্রামে বসে আরামকো, আমাজন, গুগল বা ইউটিউব এর মত নামী দামি প্রতিষ্ঠানের কাজ ফ্রিল্যাঞ্চিং এর মাধ্যমে করে লক্ষ লক্ষবৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনছে।
মেঘনা, যমুনা বা পদ্মার মত দীর্ঘ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে কয়েক ঘন্টার মধ্যে যাতায়াত সম্ভভহচ্ছে পথ অতিক্রম করতে আগে কয়েক দিন লেগে যেত। দেশের বড় বড় প্রায় সব শহরের মধ্যে আভ্যন্তরীন বিমান যোগাযোগস্থাপিত হয়েছে এবং হজরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকার সম্প্রসারণসহ এম এ জি ওসমানী বিমান বন্দর সিলেট,এবং হজরত শাহ্ পরান বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়েছে।চট্টগ্রাম, মংলা, পায়রা বন্দর কে করা হয়েছে গভীর সমুদ্র বন্দরে রূপান্তর। চট্টগ্রামে তৈরি করা হয়েছে টানেল যার ফলে গ্রাম এবংশহরের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল চালু সহ অসংখ্য ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে এবং গৃহিত হয়েছে যা দেশেকে অনন্য উচ্চতায় পৌছে দিয়েছে।দেশের নিরাপত্তা জোরদারে অনেকগুলো সেনানীবাস নির্মাণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের অধীনে আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনে বাংলাদেশেরনাম উজ্জ্বল হয়েছে এবং সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ার অন্যতম ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষা স্থান পেয়েছে। একসময় ভারত-বালাদেশসীমান্তের সীটমহলবাসীর কান্নার আওয়াজ পাওয়া যেত বাতাসে সেটি বহুল কাঙ্খিত Land Boundary Agreem (LBA) এলবিএ এর মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে।
মিয়ানমার ও ভারতের সাথে নৌ সীমান্ত নিয়ে প্রায় নৌ সেনাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হত সেটিও নিষ্পত্তি হয়েছে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে এবং সেই আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বাংলাদেশের অনুকূলে হয় এই রাজনীতির কবি কন্যার দূরদর্শীতার মাধ্যমেফলে বাংলাদেশ লাভ করে অগাধ সম্পদে ভরপূর বিশাল সমুদ্র এলাকা।বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন করে তিনি শুধু দেশেই নয় বিশ্বনেতাদের অনুস্বরণযোগ্য এক বিশ্বনেতা রাজনীতির যাদুকর মধুমতি নদীর তীরের সেই রাজনীতির কবিকন্যা বাংলাদেশের ৫ বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সূনাকের বক্তব্য সেটিই প্রমাণ করে।