অনেকেই ব্যাপারটাকে নেগেটিভলি নিলেও আমি পজিটিভলিই নিচ্ছি। বিসিএস দিয়ে ক্যাডার (আমলা) হতে একটা মানুষকে যতটা কষ্টের মধ্যে যেতে হয়, এইটুক চাওয়া কি তাদের অপরাধ হয়ে গেছে?
আমার তো মনে হয়, সড়কে আলাদা লেনও প্রয়োজন। বিসিএস লেন।হাসপাতালগুলোতেও আলাদা বিসিএস ওয়ার্ড থাকবে। ট্রেনে থাকতে পারে আলাদা আলাদা তাপানূকুল বিসিএস বগি।
চাইলে ছোটখাটো একটা শহর নিয়ে বিসিএস (আমলা) শহর বানাইয়া ফেলা যাইতে পারে। বিসিএস ক্যাডার ছাড়া কেউ ঐ শহরে ঢুকতে পারবে না। থাকতে পারবে না। (রাজশাহী এক্ষেত্রে বেস্ট চয়েজ হতে পারে)
তবে বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে সাময়িক ভিসা নিয়ে সেই শহরে সাধারণ মানুষের যাওয়ার সুযোগ থাকবে। ভিসা পেতে হলে ৫০ মার্ক্সের একটা এমসিকিউ পরীক্ষা দিতে হবে। প্রশ্ন আসবে বাংলা+ইংরেজি সাহিত্য, ম্যাথ, মানসিক দক্ষতা, ভূগোল আর আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে।
প্রতি বারে একটা করে কাট মার্কস থাকবে। যে কজন কাট মার্কস পাবে, তারাই শুধু সেই বিসিএস নগরীতে দুই ঘন্টার জন্য ঢুকতে পারবে।
আবার শুধু প্রিলিমিনারিতে ভরসা না রেখে চাইলে ভাইভার ব্যবস্থাও করা যায়। প্রশ্ন করা হবে, আলেপ্পো নগরী কোন দেশে অবস্থিত?
আ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস কে লিখেছেন? চর্যাপদের কবি কয়জন?
এখন যেমন বিসিএস ক্যাডার(আমলা)হওয়ার জন্য মানুষ কোচিং করে, তখন শুধু ঐ বিসিএস শহরে ঢোকার জন্যও মানুষ কোচিং করবে, মডেল টেস্ট দেবে।
আমাদের মা বাবারা যেমন আমাদের রূপকথার পাতালপুরীর গল্প শোনাতো, আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের শোনাবো সেই আমলাপুরীর গল্প। শোনাবো সেই সব রাজপুত্র রাজকন্যাদের গল্প, যারা শেক্সপীয়ারের একটা বই না পড়েও গড়গড় করে সব বই আর চরিত্রের নাম বলে দিতে পারে।
আমাদের বাচ্চা কাচ্চারা সেই রূপকথা শুনে শুনে বড় হবে। তাদের জীবনের স্বপ্ন হবে, ঐ আমলাপুরীতে একটা জায়গা করে নেওয়া। কে জানে, ওরা হয়তো খেলাধুলা বাদ দিয়ে ক্লাস ফাইভ থেকেই বসে যাবে ভূগোল আর মানসিক দক্ষতা পড়তে।
দুষ্টুমি থাকবে না। বাদ্রামি থাকবে না। থাকবে শুধু পড়া, পড়া আর পড়া। বাংলাদেশের সমস্ত স্কুল পরিণত হবে এক টুকরো ঢাবিতে, পোলাপাইন লাইন দিয়ে দিয়ে ঢুকবে লাইব্রেরিতে।
জ্ঞানভিত্তিক একটা সমাজ পড়ে তোলার জন্য তাই এমন উদ্যোগের গুরুত্ব অপরিসীম।”