প্রথম পাতা » মতামত » ভয়াবহ বন্যা-জলাবদ্ধতা-নদী ভাঙনের ক্ষতি থেকে টেকসই উন্নয়ন: পানিপথের খনন ও ক্ষতিপূরণ জরুরি

ভয়াবহ বন্যা-জলাবদ্ধতা-নদী ভাঙনের ক্ষতি থেকে টেকসই উন্নয়ন: পানিপথের খনন ও ক্ষতিপূরণ জরুরি

Flood Solution

ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার এক বৃদ্ধা বলছিলেন পদ্মা সেতু প্রকল্পে যাদের জমি বাধছে, তারা তো লাখ লাখ টাকা পাচ্ছে। আমার এক আত্মীয় ২২ লাখ টাকা পেয়েছে বাপের বাড়ি থেকে আরো প্রায় ৫০ লাখ টাকা পাবে। 

অন্যদিকে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার কানুকে তার বসতবাড়ি চারবার মধুমতি নদীতে হারিয়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে সরকারি রাস্তায় থাকার জায়গা খুঁজতে হচ্ছে। উপজেলার শিয়রবর গ্রামের আদি বসতবাড়ি মধুমতি নদীতে হারিয়ে গ্রামের সরকারি রাস্তা, রসুলপুর গ্রামের সরকারি রাস্তা ইত্যাদি হয়ে বর্তমানে বাতাসীর সরকারি ওয়াপদা রাস্তার পাশে কোনোরকম একটু খুপড়িঘরে ঠাঁই মিলেছে। আবার বেঁচে থাকার তাগিদে বার বার তাকে পেশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে।

একসময় প্লাস্টিকের জুতা, সেন্ডেল, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, বদনা, বালতি ইত্যাদি মেরামত করতেন। প্লাস্টিকের জুতা-সেন্ডেল এখন আর কেউ মেরামত করে না, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিলের জায়গায় স্থান হয়েছে স্টিলের রাইস, কারি ডিশ আর সিলভারের বদনা, বালতির স্থান দখল করেছে প্লাস্টিক, ফলে সেগুলো ভেঙে গেলে ফেলে দেয়, মানুষ আর মেরামত না করে নতুন একটি ক্রয় করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।

আর এই প্লাস্টিকের ভাঙাচোরা জিনিসপত্র খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর, কৃষিজমিতে সয়লাব করে পরিবেশদূষণ করছে এবং কৃষি ফসল উৎপাদন, মৎস চাষ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি ব্যাহত হচ্ছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে জাতিকে।

কানুর কাজ বদল করে চুড়ি, সুতা, লিপস্টিক, আয়না, চিরুনি, ঘুঘরি ইত্যাদি বিক্রয় করা শুরু করতে হয়েছিল। এগুলো এখন আর তার কাছ থেকে মানুষ কিনে না। যার এগুলোর প্রয়োজন, সে বাজার থেকে কিনে আনে। কানুর জন্য অপেক্ষা করে না কিন্তু একসময় মানুষ অপেক্ষা করত।

বয়সের ভারে ন্যুজ প্রায়, তবুও কানুকে প্রতিদিন মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয় ঘরে ফিরে যাওয়ার সময় চাল কিনে নেওয়ার জন্য। তবে বেচাবিক্রি আগের চেয়ে আরো কমেছে। তাই বলে তো ঘরে বসে থাকলে চলে না, গ্রামে বের হতেই হয় অসুখ-বিসুখ, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় যাই হোক না কেন।

এসকল পণ্য এখন আর তার কাছে পর্যাপ্ত না, তবে দু-চারখান কম দামি আয়না, চামচ, সিফটিপিন, সুঁচ ইত্যাদি জিনিস আবার তার মতো গরিব মানুষই তার কাছ থেকে কিনে থাকে। এ তো মধুমতি নদীভাঙনে সর্বস্ব হারানো এক কানুর জীবনের খণ্ডিত কাহিনী। নদীমাতৃক বাংলাদেশে এরকম হাজার হাজার কানুর গল্প রয়েছে আমাদের অজানা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত পদ্মা সেতু ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। বর্তমানে এ সেতুর মাধ্যমে দেশের উত্তর বঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের তো বটেই, ভারতের কলকাতা থেকে আগরতলা কোনো ধরনের যাত্রাবিরতি ছাড়া সরাসরি সড়কপথে যাওয়া সম্ভব এবং অদূরেই রেলপথেও যাওয়া সম্ভব হবে। এটি নিঃসন্দেহে প্রতিবেশী দেশ দুটির জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে অন্য কোন দেশ কে এধরনের করিডোর দেওয়ার রাজনৈতিক ঝুঁকি ও থাকে।

আবহমানকাল ধরে বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া-আসা ইত্যাদির জন্য আকাশপথ, সড়কপথ, রেলপথ এবং পানিপথ ব্যবহার হয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রথমটি সবচেয়ে নতুন, ব্যয়বহুল এবং কমসময়ের পথ। শেষক্তটি সবচেয়ে প্রাচীন এবং সাশ্রয়ী পথ, যদিও সময় একটু বেশি লাগে। তবে বিশ্বের বড় বড় এবং সিংহভাগ বাণিজ্য এ পানিপথেই সম্পন্ন হয়ে থাকে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ বহির্বিশ্বের সাথে পানিপথে ব্যবসা পরিচালনা করলেও অভ্যন্তরীণ পানিপথের খনন এবং সরকারের পানিপথের প্রতি গুরুত্বারোপের অভাবে সড়কপথে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হচ্ছে। 

ফলে ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় খরচ বৃদ্ধি পেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো আকাশছোঁয়া দামে পরিণত হয়ে আবার কানুদের মতো জনগণের জন্য হাঁসফাঁসের যে কারণ হয়েছে নদীপথের খনন হলে তা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে সেটি নির্দ্বিধায় বলা যায়।

প্রতিদিনই প্রায় খবরের শিরোনাম হয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে। ফলে দেশে আন্দোলন, বিক্ষোভসহ নানা ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়।

অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতো খনন করা হয়না অন্যদিকে খালগুলো বন্ধ করে রাস্তা তৈরি করে পানিপথ সংকীর্ণ করে পানির ধারন ক্ষমতা একেবারে ক্ষীণ করা হয়েছে যার ফলে প্রত্যেক বছর বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের উজানের দেশ ভারত অন্যায়ভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তৈরি করা নদীর পানি নিয়ন্ত্রণের বাঁধ ছাড়লেই আমাদের বন্যার পানিতে হাবুডুবু খেতে হয় এবং নদীভাঙন তীব্রতর হয় ফলে কানুদের মতো অসংখ্য ঠিকানাহীন মানুষ বা পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এবারও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ৭২ ঘণ্টা ধরে ভারী ও অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন নদীর পানির স্তর ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রাজ্যের অনেক জায়গায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে গোমতী ও ঊনকোটি জেলা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রিপুরার বাংলাদেশ ঘেঁষা খোয়াই জেলার প্রশাসন সর্বোচ্চ ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে।

খোয়াই নদের পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩১ বছর পর মধ্য ত্রিপুরার ধলাই জেলার বিশাল জলাধার ডুম্বুরের (৪১ বর্গকিলোমিটার) ‘স্ল্যাপ গেট’-এর তিনটির মধ্যে একটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষীপুর, হবিগঞ্জের তীব্র বন্যা দেখতে হচ্ছে। নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় এই গেট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। (বাংলা ট্রিবিউন রক্তিম দাশ, কলকাতা, ২২ আগস্ট ২০২৪)

সর্বশেষ বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মাঝে মরণফাঁদ ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশটির বিহার ও ঝাড়খন্ড রাজ্যে বন্যা ও পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বাঁধ খুলে দেয়া হয় বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।(আগস্ট ২৭, ২০২৪; দৈনিক নয়া দিগন্ত)

নদী প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি, প্রাকৃতিকভাবে প্রবাহিত হবে এটিই স্বাভাবিক কিন্তু ভারত আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে উজানে বাঁধ সৃষ্টি করেছে এটি যেমন ভারতের চরম অন্যায় তেমন আমাদেরও রয়েছে অভ্যন্তরীণ পানিপথ খনন না করা এবং খাল বন্ধ করে রাস্তা তৈরি করা অসচেতনতার পরিচয়। 

অন্যদিকে আমাদের দেশের শহরগুলোতে খাল দখল, জলাধার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে একটু বর্ষা হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

ভয়াবহ বন্যা, জলাবদ্ধতা, নদী ভাঙনের মতো ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন সাধন করতে কাল বিলম্ব না করে এখনই নদীসমূহ খনন এবং শহর, নগর, গ্রাম নির্বিশেষে খাল পূনঃউদ্ধার ও খনন কর্মসূচি গ্রহণ করা জরুরি।

পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক ও রেলপথ যার জমিতে হয়েছে, সে জমির মালিকগণ ক্ষতিপূরণ পেয়ে আর্থিকভাবে হয়েছে লাভবান, কিন্তু খোদ পদ্মা সেতু যাদের জমিতে দাঁড়িয়ে আছে, হয়তো সেই জমির মালিকগণ হয়েছেন নিঃস্ব, আর কোনো রাস্তায় বা কোনো শহরের বস্তিতে ঠাঁই হয়েছে তাদের।

সেতুকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ) এক্সপ্রেসওয়ে। এ সড়ক এবং রেলপথটি বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছবে। এ পথের জন্য সরকার যে সকল জমি অধিগ্রহণ করেছে, সেসকল জমির মালিকগণ স্থানীয় বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুণ বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়ে মহাখুশি। কিন্তু খোদ পদ্মা সেতু যে জমিতে দাঁড়িয়ে আছে, সেই জমির মালিকগণ ক্ষতিপূরণ পাওয়া তো দূরের কথা, সর্বস্ব হারিয়ে কোথায় তাদের ঠাঁই হয়েছে, হয়তো খোদ সরকারের কাছেও সেই তথ্য নেই।

অন্যদিকে সরকারের এ লোভনীয় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য হিড়িক পড়ে গেছে উক্ত সড়কপথ ও রেলপথ হবে এমন জায়গা বেশি টাকা খরচ করেও ক্রয় করার জন্য। এ লোভনীয় ক্ষতিপূরণ শুধু পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক বা রেলপথের কারণে নয়, সারা দেশেই সরকার যেকোনো প্রকল্পের জন্যই জমি অধিগ্রহণ করলেই জমির মালিকগণ এভাবে ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকেন।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, প্রাকৃতিক এবং অতি প্রাচীন ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সাশ্রয়ী, যোগাযোগের জন্য জনবান্ধব পানিপথ সরকারের রক্ষণাবেক্ষণ এবং গুরুত্বের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির ওপর, আর মাশুল দিতে হচ্ছে জাতিকে। যাদের জমি এ পানিপথের মধ্যে, তাদের সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ না পেয়ে বসতবাড়ি, কৃষিজমি বাগান ইত্যাদি নদীতে হারিয়ে নিঃস্ব ও ঠিকানাহীন হয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। অথচ নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিলে ঠিকানা হারানো কানুদের মতো যারা আছেন তারা আবার নতুন একটি ঠিকানা তৈরি করতে পারতেন।

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, সুতরাং পানিপথের প্রতি সরকারের যথাযথ গুরুত্বারোপই দেশটিকে সহজে পরিণত করতে পারে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রে।

একই রাষ্ট্র সড়কপথ, রেলপথ বা অন্য প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করলে জমির মালিক স্থানীয় বাজারমূল্য থেকে অধিক ক্ষতিপূরণ পায়, কিন্তু পানিপথের বা নদীর মধ্যের জমির মালিকগণ ক্ষতিপূরণ পাবে না, এ বৈষম্য দীর্ঘদিন যাবত একটি রাষ্ট্রে চলতে পারে না। রাষ্ট্র কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি জনকল্যাণমূলক সেবা প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্র জনগণের কল্যাণে সর্বদা সেবা প্রদান করে থাকে।

নদীভাঙনের ফলে জমির মালিকগণ একদিকে যেমন নিঃস্ব হয়ে যায়; অন্যদিকে কোনোদিন সেই জমি চর জেগে উঠলে জমির মালিকগণকে জমি দখল করতে মারামারি করে জীবন উৎসর্গ করতে হয়। জনকল্যাণে এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা নিরসনের পদক্ষেপ অতি দ্রুত গ্রহণ করা রাষ্ট্রৈর উপর বর্তায়।

আবার নদীভাঙনের কবল থেকে কোনো বিশেষ এলাকা বা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ করার জন্য যদি নদীর পাড় স্থায়ীভাবে বেঁধে দেওয়া হয় বা নদী তার স্থান পরিবর্তন না করে তাহলে উক্ত জমির মালিকগণের হৃত জমি ফেরত পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। এমনকি সরকার নদীর মধ্যের জমি জনগণের নিকট বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অর্থের বিনিময় ইজারা দিয়ে থাকে, যদিও সরকার জমির মালিকদের নিকট থেকে এ জমি কোনো ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্রয় করে না।

নদীপাড়ে স্থায়ীবাঁধ প্রকল্প দেশের অনেক জায়গায় গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া বাজার, যেন মধুমতি নদীতে ভেঙে না যায়, সেজন্য স্থায়ীভাবে নদীপাড়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যারা নদীর গর্ভে বসতবাড়ি, জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে তাদের কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার শিয়রবর বাজারকে একই নদীর ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য নদীপাড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের সাথে দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদন পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। নদীগর্ভে বসতবাড়ি, জমিজমা হারানো লোকজনদের কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের জমিতে বিনোদন পার্ক তৈরি করা কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়া ছাড়া আর কিছু না।

ভুক্তভোগীদের দাবি এত টাকা খরচ করে নদীপাড়ে বিনোদন পার্ক না করে আমরা যারা নদীতে সর্বস্ব হারিয়েছি আমাদের কিছু ক্ষতিপূরণ দিলে আমরা হয়ত একটু বাঁচার অবলম্বন পেতাম। আর নদী বিশেষজ্ঞদের মত নদীমাতৃক বাংলাদেশে সর্বত্র এত টাকা খরচ করে বাঁধ দেওয়া সম্ভব নয় তবে অল্প পরিমাণ টাকা খরচ নদী বা খাল খনন করলে নদী ফিরে পাবে তার নাব্যতা, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের টেকশই উন্নয়ন হবে আর বন্যার সময় সারাদেশ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রেহাই পাবে।

এমফিল গবেষক (এবিডি)
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 
alhelaljudu@gmail.com

মতামত থেকে আরও পড়ুন

লেখক পরিচিতি:

মুহাম্মদ আল্-হেলাল
মুহাম্মদ আল্-হেলাল
এমফিল গবেষক (এবিডি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইতল বিতলে আপনার লেখা আছে?আজই লিখুন



আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *