ফেইসবুককে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।
প্রজন্মকে ভুলপথে পরিচালিত করতে এই একটা মাধ্যম বেদখল হলেই যথেষ্ট। সাম্প্রতিক কালের ধর্মীয় বিদ্বেষ-উস্কানী ছড়ানোর পেছনে ফেইসবুকের অবদান সবথেকে বেশি। আপনি না চাইলেও অনেক কন্টেন্ট/ভিডিয়ো ফেইসবুক আপনার নিউজফিডে স্পন্সর করছে। যেগুলো অধিকাংশ কিছু ধর্মীয় বক্তার উদ্ভট বক্তব্য। কারো অশ্লীল ভাষার কমেন্টে রিপোর্ট করলে তারা রিভিউ দিচ্ছে ‘এটি তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে!’
অথচ বিপরীতটা ঘটছে মুক্ত চিন্তার অধিকারী কোনো ব্যক্তির স্ট্যাটাস কিংবা কমেন্টের ক্ষেত্রে। ইদানিং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের উপরে কেউ কোনো লেখা বা কোনো স্ট্যাটাস শেয়ার দিলে সেটা ফেইসবুক নিউজফিডে খুব কম দেখায়, উল্টোটা ঘটছে সাম্প্রদায়িক কোনো লেখা, ছবি, বা ভিডিয়োর ক্ষেত্রে। যাঁদের আইডি ‘See First’ করে রাখা, তাঁদের লেখাও এখন সার্চ দিয়ে খুঁজে খুঁজে পড়তে হয়।
এরকম অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পেছনে খুব পাকাপোক্ত ভাবেই লেগেছে ফেইসবুক। ‘টেক ডাউন’ করে দেওয়া হচ্ছে লেখনী কিংবা কমেন্ট। হটাৎ করে ফেইসবুক এত ধাম্মীক হলো কবে? আপনাদের সন্দেহ লাগেনা? আমার তো মাথা চুলকাই।
তর্কের খাতিরে অনেকে বলতে পারে, এসব তো ডিটেক্ট করে ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ দ্বারা। তো ভাই, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ন্ত্রণ করছে কারা?
ফেইসবুকের এই সস্তা নীতিমালার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে আমি মোটামুটি সরব। কিছুদিন আগে এধরণের একটা স্ট্যাটাস আমার টাইমলাইনে শেয়ার করেছিলাম। তাতে শেখ মুসাফির মিফতাহ নামে একজন মন্তব্য করেছেন ‘ইদানিং আমিও এই সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হচ্ছি।
দু বছর আগে কারো একটা বাংলাদেশ বিরোধী পোস্টে ‘জামাইত্তা রাজাকার’ লিখে কমেন্ট করেছিলাম। সেই কমেন্টকে অযুহাত হিসাবে দাড় করিয়ে কিছুদিন আগে আমার আইডি ৩ দিনের জন্য রেস্ট্রিকটেড করে দেয়। ফেসবুকের এই ব্যাপারটা ক্ষুদ্র মনে হলেও ছাড় দিলে চলবেনা। অবশ্যই সরকারি ভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা দরকার।’ তো তাহলে কি বুঝলেন? সর্ষের ভিতরে ভূত!
ইতোপূর্বে ফেইসবুক কেন্দ্রিক বেশ কিছু দূর্ঘটনা ঘটে গেছে বাংলাদেশে। গুজব থেকে শুরু করে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য পর্যন্ত দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেইসবুকে। এগুলোতে বিভ্রান্ত হচ্ছে সহজ-সরল, ধর্মপ্রাণ মানুষ গুলো। অথচ সবকিছু দেখেশুনেও নীরব ভূমিকা পালন করছে সরকারের সাইবার ইউনিট ও আইসিটি মন্ত্রণালয়।
আমার দেশের সরকারের উচিত বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো ফেইসবুকের রিজিওনাল (বাংলাদেশ বিষয়ক) অফিসে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এটা জরুরি। এই সিদ্ধান্তে অনেকের দ্বিমত থাকতে পারে, তবুও ফেইসবুককে হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।