প্রথম পাতা » জীবনযাপন » এবং কমলাকান্ত

এবং কমলাকান্ত

Kamalakant

বৃটিশ উপনিবেশের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা থেকে বঙ্কিম আফিম খাওয়া শুরু করলেন! মানে আফিমখোর কমলাকান্তকে সৃষ্টি করলেন। কমলাকান্ত আফিম খেয়ে পাহাড়ে নৌকা চালান নি। তিনি জ্ঞানের কথা বলেছিলেন। বিড়ালের জবানে বলেছেন বিশ্ব মানবতার কথা, বঞ্চিত মানুষের আখ্যান রচনা করেছেন ফুলের মুখে, কমলাকান্তের জবানবন্দিতে রচিত হয়েছে বৃটিশ সভ্যতার রূপ-প্রকৃতি, নির্লজ্জ বেহায়াপনা। কমলাকান্ত মুখে হেসেছেন, কিন্তু তার অন্তরাত্মা ছিল বিষাদে বিবর্ণ। তার হাসির আড়ালে লুকিয়েছিল অবারিত কান্নার রোল। কমলাকান্ত আমাদের হাসিয়েছেন, কিন্তু তিনি কেঁদেছেন। নেশাদ্রব্য খেয়ে যে এতো জ্ঞানের কথা বলা যায় তা বাঙালি যদি জানত তবে দিনে এক প্যাকেট বিড়ি না খেয়ে দিনে একবার আফিম খেতো!

কমলাকান্ত কৌতুক করেছেন কিন্তু ভাঁড় সাজেননি। তার প্রবল ব্যক্তিত্ব ছিল। ধ্যান ছিল, সাধনা ছিল, আত্মমগ্নতা ছিল। অথচ বাংলাদেশ এখন ভাঁড়ের দেশ। রাজনীতি, সমাজনীতি, ধর্মনীতি, সাহিত্য সর্বত্রই ভাঁড়ের ছড়াছড়ি। চটুল সাহিত্যিক, হালকা রাজনীতিক, বেঢক ধার্মিকে চারদিক সয়লাব। ইতর শ্রেণির মধ্যে বাঙালি হিরোইজমকে প্রত্যক্ষ করে। নিজের অক্ষমতার মধ্যে কথিত উত্থানকে কামনা করে। এরা ইতরকে প্রশ্রয় দেয় অসহায় আত্মসমর্পণের মাধ্যমে!

স্টুপিড হিরোর চেয়ে আফিমখোর কমলাকান্ত এলে অন্তত বাংলার রাজনীতি-ধর্ম-সাহিত্য ভাঁড়মুক্ত হতো!

জীবনযাপন থেকে আরও পড়ুন

লেখক পরিচিতি:

Sujon Hamid
সুজন হামিদ
জন্ম: ২৯ মার্চ, ১৯৮৭ খ্রি., শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম তাওয়াকুচায়। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পারিবারিক জীবনে তিন পুত্র আরিয়ান হামিদ বর্ণ, আদনান হামিদ বর্ষ এবং আহনাফ হামিদ পূর্ণকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। একসময় থিয়েটারে যুক্ত থেকেছেন। রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয় করেছেন অনেক পথনাটকে। মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শকে লালন করেন হৃদয়ে। স্বপ্ন দেখেন বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের। গ্রন্থ: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞানগ্রন্থ 'বাংলাকোষ'(২০২১)।

ইতল বিতলে আপনার লেখা আছে?আজই লিখুন



আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *