স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে কয়েকজন ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে গিয়ে বলে, আপনার কলেজের ছাত্র রাহুল, আমাদের ধর্মের অবমাননা করেছে। সে নূপুর শর্মার পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। স্বপন কুমার বিশ্বাস সঙ্গে সঙ্গে থানায় ফোন করেন। কেন তিনি ফোন করলেন? সাথে সাথে এলাকায় রটিয়ে দেওয়া হলো শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস ছাত্র রাহুলের পক্ষ নিয়েছে। তারপর হিন্দু শিক্ষকগণের মোটরসাইকেল পোড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় নারকীয় তান্ডব, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ। তাদের উপর হামলাও চালানো হয়, মারধোর করা হয়। এরপর কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, এলাকাবাসীর সামনে পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতিতে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই হলো আমার সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বর্তমান চিত্র! আশেকে রাসুলের নামে যারা এসব অপকর্ম করছে আমার বিশ্বাস তাদেরকে একদিন হাশরের মাঠে নবি স. এর কাছে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীকে পছন্দ করেন না। এদেশে আইন আছে। অপরাধ করলে আইনের আওতায় আনা যেতো! এদেশে কোটি কোটি আশেকে রাসুল আছে, আবার লক্ষ লক্ষ লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, খুনিও আছে। গতকাল আমাদের পাশের এলাকায় একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছয়জনকে কুপিয়েছে। তিনজন মারা গেছে। আমার বিশ্বাস সে-ও নবি প্রেমে দেওয়ানা! নবির অপমান সে-ও সহ্য করবে না! আসলে আমরা সম্মোহিত মুসলমান। এদের কোনো আদর্শ নেই। আমরা যা বিশ্বাস করি তা লালন করি না। নবি স. কে ভালোবাসলে মানুষকে হত্যা করা যায় না, অপমান করা যায় না। আমরা নবির জীবনী কতজন পড়েছি? তাঁর আদর্শ কতজন হৃদয়ে লালন করি? আমরা শুনে শুনে মুসলমানতো তাই নবি বা ইসলামের প্রতি প্রকৃত দরদ নেই। ইসলামকে ভালোবাসলে বর্বরতা মনে আসা সম্ভব নয়। বর্বরতাকে চিরতরে নিঃশেষ করার জন্যই জন্ম নিয়েছিলেন রাহমাতাল্লিল আলামিন, মদিনার বাদশা!
বন্যা দেখছেন ঠিক আছে। কিন্তু বন্যার চেয়ে ভয়ংকর পৈশাচিক ধর্মান্ধতা যে এই দেশটাকে গিলে খাচ্ছে সেটা দেখছেন তো?
বন্যা থেমে যাবে কিন্তু এই দেশকে সিরিয়া আফগানিস্তান হওয়া থেকে রক্ষা করবেন কিভাবে? এই ব্যাপারে কিছু ভাবছেন? এদেশে বিশ্বরেকর্ড করা অনেক সেতু বানিয়েছেন এটা আনন্দের। কিন্তু আগামীকাল এসব সেতুর নিচ দিয়ে পানি বইবে নাকি অমুসলিমদের রক্ত বইবে এটা এখনই ভাবা উচিত।