তোমাকে একবার ধান শালিকের দেশে নিয়ে যাবো কুমুদিনী ।
তারপর তোমার গালের পরতে পরতে মেখে দিবো ধানের ক্ষেতে তামাটে রোদের ঢেউ,
প্রান্তিক নগরীর রাজপথ ছুঁয়ে ধীরে ধীরে হেঁটে যাবো হিজল বনের দিকে
তখন রোদ গড়াবে বিকেলের বারান্দায়
সবুজ গাছের পাতায় পাতায় চুম্বন এঁকে দেহ বেয়ে নেমে আসবে বিকালের শান্ত রৌদ্র রস,
তুমি পলক তুলে দেখলে বেরঙের শিশির ধীরে ধীরে উড়ে যাবে,
পাখপাকালি আরে গাছগাছালি তোমার ছোঁওয়া পেয়ে উপকূলের সমুদ্র ঢেউয়ে নতজানু হবে রাশি রাশি।
গঞ্জের কোণে নববধূ শঙ্খ বাজাবে,
উলুধ্বণি হবে-
তুমি ধুম্রতা মেখে শানিত চোখের দৃষ্টি দিবে আশ্বিনের শিউলি প্রসাদে।
তোমার সেই দৃষ্টি নদী-কূলে বয়ে যাবে বিপন্ন পথ ধরে,
বহুদিন পর আকাশে নক্ষত্র ফুটবে,
তোমার অপরূপ রূপের ঘ্রাণে পৃথিবী চিরস্থায়ী বন্দনা তোমার পায়ে ঢেলে দিয়ে বলবে- শতাব্দীর বিদ্যুৎমাখা যুবতী।
তোমাকে পুষ্প চন্দনে গ্রহণ করবে শঙ্খচিল, পানকৌড়িদের দল, মাছরাঙ্গা এবং চঞ্চল ডাহুক ছানা।
প্রান্তিক নগরী ধন্য তোমার আগমনে,
তোমাতে বিস্মিত হবে প্রাচীন লম্পটের দল।
ভালোবাসার বেণুবনে নিশীথের চাঁদ খেলে তোমার মুখে।
কুমুদিনী, শুনো- তোমার জন্য প্রান্তরে প্রান্তরে ভালোবাসার প্রসাদ গড়ে প্রেমিক,
তুমি চোখে চোখ রাখলে মরুভূমিতে সবুজের সয়লাব ঘটে।
তীক্ষ্ণ ভালোবাসা মেখে হাত ধরে ছুটে এসো,
পাগলের প্রলাপ বকতে বকতে ছুটে এসো বিদ্যুতের মতো,
ছুটে এসো বাষ্পীয় ইঞ্জিনের মতো মুখের কাছে,
ছুটে এসো সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ মেখে
ছুটে এসো দিনরাত্রি, জোছনা, ফাল্গুনের বিক্ষুব্ধ রাত ছুঁয়ে।
তোমাকে নিয়ে গঞ্জে শব্দহীন উড়ে যাবো প্রকৃতির বুকে বুক রেখে,
ভালোবাসার অঞ্জলি পায়ে মেখে তোমাকে বুকে টেনে নিবে একজন প্রেমিক।
লাউয়ের ডগায় দীর্ঘ হও যুবকের প্রার্থনায়,
নিশ্চয় ধান শালিকের দেশ তোমার নামে ভালোবাসার দিব্যি কেটেছে,
ফুলের মালঞ্চে তোমার সূর্যকে প্রস্ফুটিত করো- কুমুদিনী।
তোমার শাড়ি আর শাড়ির আঁচলে ঝিরঝির করে ঘনঘোর বর্ষার মেঘমালা , দীঘল জোড়া প্রান্তর প্রান্তর আর প্রান্তর।
তুমি হিজলের বনে প্রাচীন নগরীর রূপরেখা এঁকো। পাখি আর পাখিরা তোমার নামে ভালবাসার মিছিল করবে ধান শালিকের দেশে,
তোমাকে একবার সেই ধান শালিকের দেশে নিয়ে যাবো…
সেই ধান শালিকের দেশে।
০১ নভেম্বর ২০২৩ ইং